স্পেন ভ্রমণে মনে হয়েছে, স্পানিয়ার্ডরা আসলে একটু নাক উঁচু জাত। ইংরেজি ব্যাবহারে অনীহা, ভিনদেশি দেখে তাদের কাছ থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখার চেষ্টা, সবকিছুতেই একটা দেমাগী ভাব আছে। অবশ্য থাকারই কথা। পৃথিবীর চার ভাগের এক ভাগ তো বলা যাই ওদেরই কলোনী ছিল। এজন্যেই বোধয় এখনো নিজেদেরকে কিছুটা উচ্চমার্গীয় ভাবে। ইতালিতে গিয়ে পরিস্থিতি দেখলাম অন্যরকম। ইতালিয়ানরা বিশেষ করে রোমের কথাই বলবো ওরা বেশ সহজ এবং মিশুক। রোমের রাস্তা ঘাটে হাঁটতে গিয়ে টের পেলাম প্রচুর বাংলাদেশী ফেরিওয়ালা রয়েছে ওখানে। তারা সেলফি স্টিক, ব্যাটারি, পাওয়ার ব্যাংক বিক্রি করছে। কয়েক জনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলাম। বাংলাদেশী জেনে কথা বললো, কিন্তু মনে হলো তথ্য গোপন করতে চায়। আন্দাজ করলাম এখানে রাস্তায় ফেরি করে জিনিস বিক্রি করছে এইটা একজন বাঙালি দেখে ফেলাতে কিছুটা লজ্জা পেয়েছে। হয়তো দেশে কোনো অবস্থা সম্পন্ন ঘরের সন্তান। একজন জানালো সে এর আগে আরব আমিরাতে ৮ বছর ছিল এবং ৩ বছর হলো ইতালিতে এসেছে। আরব আমিরাতে নাকি অনেক কষ্ট করতো, এখানে তাও ভালো আছে। যাই হোক রোমের জন্যে বরাদ্দ ছিল ৫ দিন ৬ রাত। শেষের দিন মনে হলো এর থেকে কম বরাদ্দ রাখলে আফসোস নিয়ে ফিরতে হতো। পুরো রোম শহরটাই মনে হলো প্রাচীন স্থাপনার মধ্যে থেকে জেগে উঠেছে। এখনো অনেক জায়গাতে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে।
একদিন সারাদিন বরাদ্দ রেখেছিলাম ভ্যাটিকান সিটির জন্যে। ভ্যাটিকান সিটির মিউসিয়াম, সিস্টিন চ্যাপেল আর সেইন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা (পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো চার্চ) দেখতে পুরো একদিন লাগে। ভ্যাটিকান সিটি নামের পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট এই রাষ্ট্রটি চারিদিকদিয়ে রোম শহর দ্বারা বেষ্টিত। ১৯২৯ সালে পোপের সাথে এক সমঝোতায় ইতালি সরকার ১১০ একরের এই জায়গা আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে ছেড়ে দেয়। পুরো রোমে শহর জুড়ে ভ্যাটিকানেরটাসহ ৫ টি বাসিলিকা রয়েছে। বাসিলিকা গুলো মূলত চার্চ এবং এগুলোর মধ্যে মিউসিয়ামও আছে। প্রত্যেকটাই নিজস্ব বৈশিষ্ট আর ইতিহাসে সমৃদ্ধ।
[চলবে]... ..
Related Post
প্লাজা-পিয়াজ্জা'র দেশে; পর্ব-৫ (বার্সেলোনা)প্লাজা-পিয়াজ্জা'র দেশে; পর্ব-৬ (ভ্যাটিকান সিটি, রোম)
প্লাজা-পিয়াজ্জা'র দেশে; পর্ব-৭ (রোম)
No comments:
Post a Comment